Quantcast
Channel: 'Campus Writing'» Partners
Viewing all articles
Browse latest Browse all 16

পলাশী’র সেই “খলনায়ক’’দের শেষ পরিণতি যা হয়েছিল… নিকোলাস কৌশিক

$
0
0

এই লেখাটির উদ্দেশ্য হলো পলাশীর সেই বিশ্বাসঘাতকদের শেষ পরিণতি যা হয়েছিল তার স্বরুপ পাঠকদের স্বম্মুখে উন্মোচন।ইতিহাসের ছাত্র নই, ইচ্ছা ছিলো সাহিত্য অথবা সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ার কিন্ত বাস্তবতার পিছুটান আর পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে শেষ পর্যন্ত হয়ে গেলাম ব্যবসায় প্রশাসনের ছাত্র।তাই ইতিহাসনির্ভর একটি নিবন্ধ যেমন তথ্যপ্রাচুর্যতা ও শতভাগ শুদ্ধতার দাবী রাখে, সেই দাবী মেটাতে এই নিবন্ধ হয়তো কিঞ্চিৎ ব্যর্থ। তাই শুরুতেই এই নিবন্ধটির অজানা ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য পাঠকদের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
লেখাটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো সেই খলনায়কদের শেষ জীবনের প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাদের কারণে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়েছিলো। আসুন দেখে নেয়া যাক, সেই খলনায়ক ও বিশ্বাসঘাতকদের শেষ পরিণতি কি হয়েছিলোঃ

লর্ড-ক্লাইভ
বাংলায় ব্রিটিশ ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর দোর্দন্ড প্রতাপশালী প্রধান ছিলেন লর্ড ক্লাইভ।পলাশীর যুদ্ধে ও যুদ্ধপরবর্তী তার নিষ্ঠুরতা বর্ণণার’ও অযোগ্য।যুদ্ধপরবর্তী সময়ে হত্যা,ধর্ষণ,সম্পদ-লুটতরাজসহ বিবিধ অপকর্মে লিপ্ত হয় এই সাদা চামড়া ও তার হায়েনাবাহিনী।নবাব পরিবারের সাথে তার নিষ্ঠুর আচরণে আজো কেপে উঠে যে কেনো বিবেকবান মানুষের হৃদয়। লর্ড-ক্লাইভের নিষ্ঠুরতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিদ্রোহী কবি নজরুল লিখেছিলেন

“বাঙ্গালীর খুনে লাল হলো হেথা ক্লাইভের খঞ্জর,

       ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে ভাই ভারতের দিবাকর”

কিন্তূ ভাগ্যর কি নির্মম পরিহাস, এই দোর্দন্ড প্রতাপশালীর শেষ জীবন কাটে নিদারুন অর্থকষ্টে।যুদ্ধপরবর্তী সময়ে হত্যা,ধর্ষণ,সম্পদ-লুটতরাজ,রাষ্ট্রীয় তহবিল তছরুপ,অস্বচ্ছ হিসাব প্রদানসহ বহু অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে স্বয়ং ব্রিটিশ মিডিয়া। ব্রিটিশ হাউস-অব-কমন্স’এর সদস্যরাও তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন।অব্যাহত প্রতিবাদের মুখে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে হউস-অব-লর্ডস।দীর্ঘদিন এই তদন্ত কমিটির শুনানীতে তাকে অংশ নিতে হয় এবং আনীত অভিযোগ মোকাবেলায় আইনী খরচ মেটাতে বাংলা হতে লুটকৃত সমস্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। এক পর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার তার সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। ফলে, শেষ জীবনে সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ক্লাইভ এবং তার পরিবারের সদস্যরাও তাকে ত্যাগ করে চলে যায়।হতদরিদ্র অবস্থায় চরম হতাশাবোধ থেকে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন ক্লাইভ। হায়,পলাশীর সেই বিজয়ী বীর(!) কিনা শেষ পর্যন্ত কাপুরুষের মতো পৃথিবী ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই ছিলো লর্ড ক্লাইভের শেষ পরিণতি।

মীরজাফর
বর্তমানে বাংলা ভাষায় বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয় মীরজাফর নামটি। পুরো নাম মীর জাফর আলী খান। এই বিস্বাসঘাতক স্বপ্ন দেখতো একদিন সে বাংলার নবাব হবে।এই ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাথে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় মীর জাফর।দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এই বিস্বাসঘাতক বাংলার নবাব হতে পারলেও তার এই সুখ বেশীদিন স্থায়ী হয়নি। অল্প কিছুদিনের মাঝেই তার ব্রিটিশ প্রভুরা তাকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে,তাকে নবাব পদ থেকে সড়িয়ে দেওয়া হয়। শেষ জীবনে তাকেও অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়। এক পর্যায়ে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা যায় বেইমান মীর জাফর আলী খান। কথিত আছে,কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তার গায়ের চামড়া পচে খসে পড়ে যায়। এই ছিলো বেইমান মীরজাফরের শেষ পরিণতি।

মীর কাসিম

পলাশীর আরেক খলনায়ক মীর কাসিম। ব্রিটিশদের তাবেদারী করে বাংলার নবাব হতে পারলেও এক পর্যায়ে তাকেও আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী। ফলে,মীর কাসিমের সাথে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর যুদ্ধ হয় যা ইতিহাসে “বক্সারের যুদ্ধ” নামে পরিচিত। বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দিল্লী পালিয়ে যান মীর কাসিম।দিল্লীরপথে-প্রান্তরে শতচ্ছিন্ন বস্ত্রে অবস্থানকালীন সময়ে এক পর্যায়ে দিল্লী জামে মসজিদের নিকট মৃত্যুবরণ করেন মীর কাসিম।শেষ জীবনে ভিখারী দশায় মীর কাসিমকে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

ঘষেটি বেগম

সম্পর্কে ঘষেটি বেগম ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার আপন খালা।ঘষেটি বেগম স্বপ্ন দেখতেন তিনি হবেন বাংলার প্রথম মহিলা নবাব।এই ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য তিনিও হাত মেলান ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাথে।প্রাসাদের সকল গোপনীয় তথ্য ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে পাচার করতো এই উচ্চভিলাষী বিস্বাসঘাতক রমণী। পলাশীর যুদ্ধের পর মীরজাফরপুত্র মীরন উপলব্ধি করতে পারে তার পিতার নবাব হবার পথে সবচেয়ে বড় বাধা ঘষেটি বেগম।তাই মীরন চক্রান্ত করে ঢাকার অদুরবর্তী ধলেশ্বরী নদীতে নৌকা ডুবিয়ে ঘষেটি বেগমকে হত্যা করে।এভাবেই এক ষড়যন্ত্রকারীর হাতে আরেক ষড়যন্ত্রকারীর হয় সলিল সমাধি।

মীরন
পলাশীর যুদ্ধের আরেক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারী হলো মীরন। তার নির্দেশেই মোহাম্মাদী বেগ নির্মমভাবে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে। মীরনের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে।

জগত শেঠ
পলাশীর যুদ্ধের অন্যতম ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারী হলো জগত শেঠ। কাশিমবাজার ষড়যন্ত্রের প্রধানতম নায়ক এই জগত শেঠ। তার পরিণতি ছিলো আরো ভয়ংকর। মীর কাসিমের নির্দেশে বিহারের “মুঙ্গের দুর্গ” থেকে বস্তাবন্দী করে তাকে নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়।এক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয় যে, এক ষড়যন্ত্রকারীর হাতে আরেক ষড়যন্ত্রকারীর হয় সলিল সমাধি।

উমিচাঁদ
কাশিমবাজার ষড়যন্ত্রের আরেক নায়ক উমিচাঁদ। দেশের সাথে বিস্বাসঘাতকতা করে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাথে যোগ দিলেও মজার ব্যাপার হলো বিস্বাসভঙ্গের অপরাধে তাকেই সাজা দেয় ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী।অর্থাৎ যার জন্য সে করলো চুরি,তারাই তাকে বললো চোর। উমিচাঁদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।কপর্দকহীন নিঃস্ব অবস্থায় তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

নন্দকুমার
নন্দকুমারকেও উমিচাঁদের পরিণতি বরণ করতে হয়।তহবিল তছরুপের অভিযোগে তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হয়।

এই ছিলো পলাশীর খলনায়ক ও বিস্বাসঘাতকদের শেষ পরণতি। প্রত্যেককেই নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়। সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক যে ব্যাপারটি সেটি হলো, এক বিস্বাসঘাতকের হাতে হয় আরেক বিস্বাসঘাতকের মৃত্যু। কথায় আছে, “History Repeats Itself’’.তারা যে বিস্বাসঘাতকতা দেশের সাথে করে,সেই একই বিস্বাসঘাতকতার পুনরাবৃত্তি তাদের জীবনেও ঘটে।আর এভাবেই বিস্বাসঘাতকরা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।

এই লেখাটির উদ্দেশ্য হলো পলাশীর সেই বিশ্বাসঘাতকদের শেষ পরিণতি যা হয়েছিল তার স্বরুপ পাঠকদের স্বম্মুখে উন্মোচন।ইতিহাসের ছাত্র নই, ইচ্ছা ছিলো সাহিত্য অথবা সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ার কিন্ত বাস্তবতার পিছুটান আর পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে শেষ পর্যন্ত হয়ে গেলাম ব্যবসায় প্রশাসনের ছাত্র।তাই ইতিহাসনির্ভর একটি নিবন্ধ যেমন তথ্যপ্রাচুর্যতা ও শতভাগ শুদ্ধতার দাবী রাখে, সেই দাবী মেটাতে এই নিবন্ধ হয়তো কিঞ্চিৎ ব্যর্থ। তাই শুরুতেই এই নিবন্ধটির অজানা ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য পাঠকদের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
লেখাটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো সেই খলনায়কদের শেষ জীবনের প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাদের কারণে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়েছিলো। আসুন দেখে নেয়া যাক, সেই খলনায়ক ও বিশ্বাসঘাতকদের শেষ পরিণতি কি হয়েছিলোঃ
লর্ড-ক্লাইভ
বাংলায় ব্রিটিশ ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর দোর্দন্ড প্রতাপশালী প্রধান ছিলেন লর্ড ক্লাইভ।পলাশীর যুদ্ধে ও যুদ্ধপরবর্তী তার নিষ্ঠুরতা বর্ণণার’ও অযোগ্য।যুদ্ধপরবর্তী সময়ে হত্যা,ধর্ষণ,সম্পদ-লুটতরাজসহ বিবিধ অপকর্মে লিপ্ত হয় এই সাদা চামড়া ও তার হায়েনাবাহিনী।নবাব পরিবারের সাথে তার নিষ্ঠুর আচরণে আজো কেপে উঠে যে কেনো বিবেকবান মানুষের হৃদয়। লর্ড-ক্লাইভের নিষ্ঠুরতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিদ্রোহী কবি নজরুল লিখেছিলেন
“বাঙ্গালীর খুনে লাল হলো হেথা ক্লাইভের খঞ্জর,
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে ভাই ভারতের দিবাকর”
কিন্তূ ভাগ্যর কি নির্মম পরিহাস, এই দোর্দন্ড প্রতাপশালীর শেষ জীবন কাটে নিদারুন অর্থকষ্টে।যুদ্ধপরবর্তী সময়ে হত্যা,ধর্ষণ,সম্পদ-লুটতরাজ,রাষ্ট্রীয় তহবিল তছরুপ,অস্বচ্ছ হিসাব প্রদানসহ বহু অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে স্বয়ং ব্রিটিশ মিডিয়া। ব্রিটিশ হাউস-অব-কমন্স’এর সদস্যরাও তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন।অব্যাহত প্রতিবাদের মুখে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে হউস-অব-লর্ডস।দীর্ঘদিন এই তদন্ত কমিটির শুনানীতে তাকে অংশ নিতে হয় এবং আনীত অভিযোগ মোকাবেলায় আইনী খরচ মেটাতে বাংলা হতে লুটকৃত সমস্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। এক পর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার তার সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। ফলে, শেষ জীবনে সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ক্লাইভ এবং তার পরিবারের সদস্যরাও তাকে ত্যাগ করে চলে যায়।হতদরিদ্র অবস্থায় চরম হতাশাবোধ থেকে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন ক্লাইভ। হায়,পলাশীর সেই বিজয়ী বীর(!) কিনা শেষ পর্যন্ত কাপুরুষের মতো পৃথিবী ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই ছিলো লর্ড ক্লাইভের শেষ পরিণতি।
মীরজাফর
বর্তমানে বাংলা ভাষায় বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয় মীরজাফর নামটি। পুরো নাম মীর জাফর আলী খান। এই বিস্বাসঘাতক স্বপ্ন দেখতো একদিন সে বাংলার নবাব হবে।এই ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাথে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় মীর জাফর।দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এই বিস্বাসঘাতক বাংলার নবাব হতে পারলেও তার এই সুখ বেশীদিন স্থায়ী হয়নি। অল্প কিছুদিনের মাঝেই তার ব্রিটিশ প্রভুরা তাকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে,তাকে নবাব পদ থেকে সড়িয়ে দেওয়া হয়। শেষ জীবনে তাকেও অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়। এক পর্যায়ে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা যায় বেইমান মীর জাফর আলী খান। কথিত আছে,কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তার গায়ের চামড়া পচে খসে পড়ে যায়। এই ছিলো বেইমান মীরজাফরের শেষ পরিণতি।
মীর কাসিম
পলাশীর আরেক খলনায়ক মীর কাসিম। ব্রিটিশদের তাবেদারী করে বাংলার নবাব হতে পারলেও এক পর্যায়ে তাকেও আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী। ফলে,মীর কাসিমের সাথে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর যুদ্ধ হয় যা ইতিহাসে “বক্সারের যুদ্ধ” নামে পরিচিত। বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দিল্লী পালিয়ে যান মীর কাসিম।দিল্লীরপথে-প্রান্তরে শতচ্ছিন্ন বস্ত্রে অবস্থানকালীন সময়ে এক পর্যায়ে দিল্লী জামে মসজিদের নিকট মৃত্যুবরণ করেন মীর কাসিম।শেষ জীবনে ভিখারী দশায় মীর কাসিমকে মৃত্যুবরণ করতে হয়।
ঘষেটি বেগম
সম্পর্কে ঘষেটি বেগম ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার আপন খালা।ঘষেটি বেগম স্বপ্ন দেখতেন তিনি হবেন বাংলার প্রথম মহিলা নবাব।এই ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য তিনিও হাত মেলান ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাথে।প্রাসাদের সকল গোপনীয় তথ্য ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে পাচার করতো এই উচ্চভিলাষী বিস্বাসঘাতক রমণী। পলাশীর যুদ্ধের পর মীরজাফরপুত্র মীরন উপলব্ধি করতে পারে তার পিতার নবাব হবার পথে সবচেয়ে বড় বাধা ঘষেটি বেগম।তাই মীরন চক্রান্ত করে ঢাকার অদুরবর্তী ধলেশ্বরী নদীতে নৌকা ডুবিয়ে ঘষেটি বেগমকে হত্যা করে।এভাবেই এক ষড়যন্ত্রকারীর হাতে আরেক ষড়যন্ত্রকারীর হয় সলিল সমাধি।
মীরন
পলাশীর যুদ্ধের আরেক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারী হলো মীরন। তার নির্দেশেই মোহাম্মাদী বেগ নির্মমভাবে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে। মীরনের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে।

জগত শেঠ
পলাশীর যুদ্ধের অন্যতম ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারী হলো জগত শেঠ। কাশিমবাজার ষড়যন্ত্রের প্রধানতম নায়ক এই জগত শেঠ। তার পরিণতি ছিলো আরো ভয়ংকর। মীর কাসিমের নির্দেশে বিহারের “মুঙ্গের দুর্গ” থেকে বস্তাবন্দী করে তাকে নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়।এক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয় যে, এক ষড়যন্ত্রকারীর হাতে আরেক ষড়যন্ত্রকারীর হয় সলিল সমাধি।

উমিচাঁদ
কাশিমবাজার ষড়যন্ত্রের আরেক নায়ক উমিচাঁদ। দেশের সাথে বিস্বাসঘাতকতা করে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাথে যোগ দিলেও মজার ব্যাপার হলো বিস্বাসভঙ্গের অপরাধে তাকেই সাজা দেয় ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী।অর্থাৎ যার জন্য সে করলো চুরি,তারাই তাকে বললো চোর। উমিচাঁদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।কপর্দকহীন নিঃস্ব অবস্থায় তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

নন্দকুমার
নন্দকুমারকেও উমিচাঁদের পরিণতি বরণ করতে হয়।তহবিল তছরুপের অভিযোগে তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হয়।
এই ছিলো পলাশীর খলনায়ক ও বিস্বাসঘাতকদের শেষ পরণতি। প্রত্যেককেই নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়। সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক যে ব্যাপারটি সেটি হলো, এক বিস্বাসঘাতকের হাতে হয় আরেক বিস্বাসঘাতকের মৃত্যু। কথায় আছে, “History Repeats Itself’’.তারা যে বিস্বাসঘাতকতা দেশের সাথে করে,সেই একই বিস্বাসঘাতকতার পুনরাবৃত্তি তাদের জীবনেও ঘটে।আর এভাবেই বিস্বাসঘাতকরা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।

 

read more from our partners ReflectiveTeens


Filed under: Partners

Viewing all articles
Browse latest Browse all 16

Latest Images

Trending Articles





Latest Images